How to find pi

কয়েকদিন আগে বিশ্ব পাই দিবস উদযাপিত হলো সারা পৃথিবিতে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও গণিতপ্রেমী মানুষ এইদিনটি উদযাপন করেছে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে। গণিতে পাইয়ের প্রভাব বেশ বড়। এই পাইয়ের মান বের করার জন্যে পৃথিবীতে মোটামুটি কয়েকশ পদ্ধতি আছে। পাইয়ের মান ব্যবহারিক ভাবে বের করারও উপায় একেবারে কম নয়। আমি নিজে এক পদ্ধতিতে পাইয়ের মান বের করি। এই পদ্ধতিতে আমার জানামতে এর আগে কেউ পাইয়ের মান বের করেননি। 

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

বলার মতো তেমন কিছুই না। একটি কাগজ, একটি কলম আর স্টুডেন্টভর্তি একটি ক্লাসরুম। আমার মতে মোটামুটি ৩০ জনের মতো মানুষ থাকলেই পাইয়ের বেশ ভালো একটি মান আসবে। 

কি করতে হবে?

প্রথমে কাগজের মাঝখানে একটি বৃত্ত আঁকতে হবে। এবার এই কাগজটি ক্লাসের স্টুডেন্টদের মাঝে দিয়ে বলতে হবে তারা যেন নিজেদের ডাকনাম লিখে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, নামগুলি যেনো এমনভাবে লিখা না হয়ে, যাতে অনেকগুলি নাম বৃত্তের একপাশে জড়ো হবে কিন্তু বৃত্তের একটা পাশ ফাঁকা থাকবে। মোটামুটি পুরো বৃত্তে যেনো নামগুলি ছড়ানো থাকে। 

সবার নাম লিখা হয়ে গেলে কাগজটি নিয়ে বৃত্তের ভেতর মোট কতটি নাম লিখা হয়েছে তা গুণতে হবে। এবার বৃত্তের ভেতর একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ আঁকতে হবে যার ভূমি হবে বৃত্তের ব্যাস। বৃত্তের ভেতর সমদ্বিবাহু ত্রিভুজটি হবে নিচের ছবির মতো। 

এবার সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ভেতর কয়টি নাম পড়েছে তা গুণতে হবে। আগের সংখ্যাকে এই সংখ্যাটি দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগফল মোটামুটি ৩.১ এর মতো আসা উচিত যা পাইয়ের মান (৩.১৪১৫৯……) এর কাছাকাছি। ব্যাস পেয়ে গেলাম পাইয়ের মান! 

উদাহরণঃ

২০১৯ সালে একটি ম্যাথ ক্যাম্পে আমি এই পদ্ধতিতে পাইয়ের মান বের করার চেষ্টা করেছিলাম। নিচের ছবিতে আমি নিজের স্বাক্ষর দিয়ে উদাহরণ দিচ্ছি (কারণ, আমার পক্ষে এখন ক্লাসভর্তি স্টুডেন্ট পাওয়া সম্ভব নয়)। 

আমি প্রথমে বৃত্তের ভেতর স্বাক্ষর করলাম। 

গাণিতিক ব্যাখ্যাঃ

যারা বুদ্ধিমান তারা অনেকেই হয়তোবা এখানে কি হচ্ছে তা বুঝে ফেলেছেন। যারা আমার মতো, তাদের জন্যে নিচের ব্যাখ্যা। 

আমরা ধরে নেই, যে বৃত্তে সবার নাম নেয়া হয়েছে তার ব্যাসার্ধ r. তাহলে বৃত্তের ক্ষেত্রফল r2। এবার আমরা সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল বের করবো। 

ভূমি = 2r

উচ্চতা = r

কাজেই ক্ষেত্রফল = 12X ভূমি X উচ্চতা

                           = 12X 2r  X r

                           = r2

এবার আমরা দেখি বৃত্তের ক্ষেত্রফলকে ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল দিয়ে ভাগ দেই।

বৃত্তের ক্ষেত্রফলত্রিভুজের ক্ষেত্রফল= r2r2=

আমি এই কাজটিই করেছি। বৃত্তের ভেতরের মোট নামের সংখ্যা (যেটি বৃত্তের ক্ষেত্রফলকে রিপ্রেসেন্ট করছে) – কে ত্রিভুজের ভেতরের মোট নামের সংখ্যা (যেটি ত্রিভুজের ক্ষেত্রফলকে রিপ্রেসেন্ট করছে) দিয়ে ভাগ দিয়েছি। 

স্বীকার্যঃ সৌমিত্র চক্রবর্তী দাদার নিজের তৈরি করা একটি পদ্ধতি আছে স্বাক্ষর দিয়ে বৃত্তের মান বের করার (যেখানে বৃত্ত এবং বর্গ দিয়ে কাজটি করা হয়)। আমি উনার পদ্ধতি দেখেই অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের একটি পদ্ধতি বের করার চেষ্টা শুরু করেছিলাম। দাদাকে অনেক ধন্যবাদ। গণিত অলিম্পিয়াডের মানুষজন দাদার এই পদ্ধতিকে সৌমিত্রের স্বাক্ষর নামে চিনে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *